News:

                                                  স্কুল কলেজের ইতিহাস
 

ষাটের দশকের প্রথম দিকে রাজশাহী থেকে আগত ডাঃমোঃ নজরুল ইসলাম ঘোড়াশাল উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে সরকারি চাকুরিতে যোগদান করেন। পরে তিনি ঘোড়াশালের স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে যান এবং চাকুরি ছেড়ে ঘোড়াশালে একটি ক্লিনিক স্থাপন করেন। তিনি একজন সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী ছিলেন। ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম নারী শিক্ষার প্রসারের লক্ষ্যে ঘোড়াশালে একটি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। তাঁকে এ কাজে উদ্বyদ্ধ এবং সহযোগিতা করেন পাইকসা নিবাসী মোঃ ইউনুস আলী মাস্টার। ২০/০৮/১৯৮৩ খ্রি: তারিখে ঘোড়াশাল ইউনিয়ন পরিষদে স্থানীয় সূধী সমাজের এক সভায় ঘোড়াশাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় নামে একটি স্কুল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম প্রস্তাবিত এ বিদ্যালয়ের জন্য ৫১ শতাংশ জমি দান করেন। ১৯৮৪ সালে ১ম শ্রেণি থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়। ৫ মার্চ, ১৯৮৫ খ্রি: তারিখে ঘোড়াশাল জুনিয়র গার্লস স্কুল নামে সরকারি স্বীকৃতি পায় এবং ১৯৮৫- ৮৬ অর্থবছরে ১ম শ্রেণি থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত জুনিয়র স্কুলের স্টাফিং প্যাটার্ণ অনুযায়ী ১৩ জন শিক্ষক ও ৪ জন কর্মচারী এমপিও ভুক্ত হয়। ১৯৮৬ সালে ৯ম শ্রেণি এবং ১৯৮৭ সালে ১০ম শ্রেণি খোলা হয়। ১৯৮৭ সালের ডিসেম্বর মাসে ঘোড়াশাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় নামে ৯ম শ্রেণি খোলার অনুমতি প্রাপ্ত হয়। ১৯৯২ সালে হাই স্কুল হিসেবে স্বীকৃতি প্রাপ্ত হয়ে ১৯৯৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে হাই স্কুল হিসেবে এমপিও ভুক্ত হয়।১৯৯১ সালে  ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম  এ স্কুলের নামে আরো ৫১ শতাংশ জমিদান করেন। ১৯৯৫ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত স্কুলটির অবস্থান ছিল বর্তমানে যেখানে ‘রোটারী হাছিনা নূর-মহসিন মেমোরিয়াল হাসপাতাল ঠিক সেই স্থানে। ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম ১৯৯৫ সালের প্রথম দিকে স্কুল গৃহ সরিয়ে বর্তমান স্থানে আনার উদ্যোগ নেন এবং স্কুল গৃহ নির্মাণ কাজ শুরু করেন। শুরু থেকে ০৪/০২/১৯৯৫খ্রিঃ পর্যন্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন মোঃ ইউনুস আলী। ০৪/০২/১৯৯৫খ্রি: তারিখে তাঁর আকস্মিক মৃত্যুর পর স্কুলের দায়িত্ব গ্রহণ করেন মোঃ মাহবুব কবির। ১৯৯৫ সালে শিক্ষা মন্ত্রনালয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একাদশ শ্রেণি খোলার সুযোগ দেয়। ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম সাহেবের  প্রবল আগ্রহ ও সহযোগিতায় এবং মোঃ মাহবুব কবির এর অক্লান্ত পরিশ্রমে  ১৯৯৫- ৯৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণি খোলা হয় এবং ১৯৯৬ সালে ঘোড়াশাল উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় নামে অনুমতি প্রাপ্ত হয়। অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে ২০০০ সালে কলেজ শাখা এমপিও ভুক্ত হয়। একাদশ শ্রেণি খোলার সময় ন্যূনতম ছাত্রী সংখ্যা, দক্ষ জনবল, প্রয়োজনীয় ভবন, আসবাব এবং প্রয়োজনীয় অর্থ এর কোনটিই ছিল না। আলহাজ্ব ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলামের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ গভার্ণিং বডি গত ১৯/০৮/১৯৯৯ খ্রিঃ তারিখে তাঁর মাতা নূর-জাহান নামের প্রথম অংশ ‘নূর’ এবং পিতা মহসিন আলী নামের প্রথম অংশ ‘মহসিন’ এর সমন্বয়ে ‘নূর-মহসিন’ প্রতিষ্ঠানের নামের সাথে যুক্ত করে ‘ঘোড়াশাল নূর-মহসিন উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়’ নামকরণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। শিক্ষা বোর্ড এ নাম অনুমোদন দেয় নাই। এরপর গত ০৫/০৫/২০০১ খ্রি: তারিখের সভায় গভার্ণিং বডি প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে ‘ঘোড়াশাল নূর-মহসিন গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ’ নামকরণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ নামও শিক্ষা বোর্ড অনুমোদন দেয় নাই। গত ২৪/০২/২০০২ খ্রি: তারিখে আলহাজ্ব ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম সাহেবের ইন্তেকালের পর ২৮/০২/২০০৩ খ্রি: তারিখে গভার্নিং বডির সভায় পূর্ববর্তী প্রস্তাবিত নাম পরিমার্জন করে ‘ডাঃ নজরুল বিন নূর-মহসিন উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়’ নামকরণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। গত ১১/০২/২০০৪ খ্রি: তারিখে এ নাম সরকারি ভাবে অনুমোদন পায়।স্কুল গৃহ নির্মাণ, শিক্ষকদের বেতন প্রদানসহ অন্যান্য কাজে আলহাজ্ব ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম সাধ্যমত অর্থ প্রদান করেছেন। তাঁর সাথে আরো যারা এগিয়ে এসেছেন, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- কবির ফাউন্ডেশন, রোটারি ক্লাব অব মেট্রোপলিটন  ঢাকা,  আলহাজ্ব অধ্যাপক মোঃ ফজলুল হক ও মোঃ ইউনুস আলী মাস্টার।১৯৯৫ সালে ১টি, ২০০১ সালে ১টি এবং ২০০৬ সালে ২টি, মোট ৪ টি ভবন সরকারি ভাবে বরাদ্ধ এনে অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করে এ প্রতিষ্ঠানের চেহারা পাল্টিয়ে দিয়েছেন তৎকালীন এমপি ও মন্ত্রী ডঃ আব্দুল মঈন খান। ২০১২ সালে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপনের সময় তৎকালীন এমপি ডাঃ আনোয়ারুল আশরাফ খান অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮৮ সাল থেকে এসএসসি  ও ১৯৯৭ সালথেকে এইচ এস সি পরীক্ষায় অংশ নেয়। বর্তমান স্কুল ও কলেজ উভয় শাখাতে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক শাখা চালু আছে। স্কুল শাখায় ১৫ জন শিক্ষক, ৪ জন কর্মচারী এবং কলেজ শাখায় ২১ জন শিক্ষক ও ৫ জন কর্মচারীর পদ রয়েছে।